তোমরা জান, আমরা পৃথিবী পৃষ্ঠে বাস করি। আমরা উপরের দিকে তাকালে কী দেখতে পাই? দিনের বেলায় দেখি সূর্য। কখনও দেখি মেঘ। মেঘ না থাকলে রাতের আকাশে দেখি চাঁদ, নক্ষত্র বা তারা। কখনও কী প্রশ্ন জেগেছে মনে, এই পৃথিবী কীভাবে সৃষ্টি হলো? সূর্য, তারা, চাঁদ এরা কীভাবে সৃষ্টি হয়েছে?

বিভিন্ন সমাজে পৃথিবী ও মহাবিশ্বের উৎপত্তি বিষয়ে বিভিন্ন তত্ত্ব ও কাহিনি প্রচলিত রয়েছে। যেমন প্রাচীন চীনের রূপকথায় বলা হয় যে, একটি বিশাল ডিম থেকে প্রথমে একটি দৈত্য জন্ম নেয়। সেই দৈত্যের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থেকে এই মহাবিশ্বের সবকিছুর জন্ম। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ ব্যবহার করে পৃথিবী ও মহাবিশ্বের উৎপত্তি সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন, প্রায় ১৩৭০ কোটি বা ১৩.৭ বিলিয়ন বছর পূর্বে মহাবিশ্ব একটি অসীম ঘনত্বের ও প্রচণ্ড উত্তপ্ত বিন্দুভরে ঘনীভূত ছিল যা বিস্ফোরিত হয়ে সকল দিকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। এ বিস্ফোরণকে মহাবিস্ফোরণ বলা হয়। মহাবিস্ফোরণের পর অতি ক্ষুদ্র পদার্থ কণা তৈরি হয়। তারপর ছোট ছোট কণাগুলো কিছুটা ঠান্ডা ও একত্রিত হয়ে জ্যোতিষ্কে পরিণত হয়। এভাবে সূর্য ও অন্যান্য নক্ষত্র সৃষ্টি হয়। একদিকে তখন ছোটো ছোটো কণা মিলে জ্যোতিষ্ক সৃষ্টি হচ্ছিল। একই সাথে তখন মহাবিশ্ব আরও সম্প্রসারিত হচ্ছিল।

মহাবিশ্বের সকল শক্তি, পদার্থ, মহাকাশ সব কিছু এই বিস্ফোরণ থেকে সৃষ্টি হয়েছে। ধারণা করা হয় সূর্য যখন সৃষ্টি হয় তখন সূর্য যে ধূলিকণা ও গ্যাস থেকে তৈরি হয়েছিল তার কিছু অবশিষ্ট অংশ মহাকাশে ধূলিকণার মতো ভেসে বেড়িয়েছে। তারপর এখন থেকে প্রায় সাড়ে চার বিলিয়ন বছর পূবে এই ধূলিকণা একত্রিত হয়ে পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে।
মহাবিস্ফোরণের সমর্থনে প্রমাণ: মহাবিশ্ব একটি মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে তার পক্ষে অনেক
তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। এর একটি প্রমাণ হলো, মহাবিশ্ব এখনও বিস্তৃত বা সম্প্রসারিত হচ্ছে। মহাকাশের গ্যালাক্সি/ ছায়াপথ ও তারাসমূহ একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। কাজেই ধারণা করা হয় যে সুদূর অতীতে এরা হয়তো একসময় একসাথে ক্ষুদ্র একটি জায়গায় ছিল; বিস্ফোরণের মাধ্যমে এরা আলাদা হয়েছে।
Read more